নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতালের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এতে রোগীর স্বজনরা ও স্থানীয়রা গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়ে কর্মরত স্টাফদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ঘটনার পর চিকিৎসক ও হাসপাতালটির ম্যানেজারকে পাওয়া যায়নি। প্রাণ হারানো ২৬ বছর বয়সী নিপা আক্তার ভবেরচর এলাকার মো. শামীমের স্ত্রী।
নিপার স্বজনরা জানায়, গত শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে ডা. রাজিয়া বেগমের তত্ত্বাবধানে প্রসূতি নিপার সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হয়। অপারেশন শুরুর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে তাদের জানানো হয়, মেয়ে বাচ্চা হয়েছে, বাচ্চার অবস্থা ভালো। কিন্তু দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরও নিপাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় তাদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পরে তাদের জানানো হয়, বাচ্চার মায়ের অবস্থা খারাপ তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। এরপর নিপাকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ভাষ্য, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অনেক আগেই নিপার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজিয়া বেগম বলেন, ‘রোগীর আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ছিল। আমি অপারেশন করার পরে বিষয়টি ধরতে পেরেছি। আমি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দিতে বলেছিলাম। এখানে আমার কোনো অবহেলা ছিল না।’
গজারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, নিহতের স্বজনরা থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে।
গতকাল শনিবার সকালে তার বড় বোন রত্না আক্তার গজারিয়া থানা থেকে লাশ তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের মীমাংসা হয়েছে। তাই ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ ভবেরচর কলেজে নিয়ে জানাজা শেষে ভবেরচর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে জানা যায়।