নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেখা দিয়েছে গজারিয়া অংশে ভাঙ্গন। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ইসমানিরচর গ্রামের কয়েক শত পরিবারের। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় ইসমানিরচর গ্রামের কয়েক শত নারী-পুরুষ এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এসময় তাদের আশ্বাস দিতে মানববন্ধনে উপস্থিত হয় স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মামুুনুর রশিদ। তিনি মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আপনাদের এই নদী ভাঙ্গন বিষয়ে ২০০৯ সাল থেকে অবগত। এই নদী ভাঙ্গন নিয়ে মাননীয় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সাথে কথা বলে অতি দ্রুত একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
স্থানীয় বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার সেলিম খাঁন বলেন, গত কয়েকদিনে ক্রমাগত ঢেউ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা বাসিন্দাদের মনে। ইসমানিরচর এলাকায় নদী ভাঙন এখন বড় আকার ধারণ করেছে। এখন যদি এই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না গ্রহণ করা হয় তাহলে মানচিত্র থেকে ইসমানিরচর গ্রামটি বিলীন হয়ে যাবে। নদী ভাঙ্গন রোধে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
মানববন্ধন করা এলাকাবাসী বলেন, ভাঙ্গন থেকে বাঁচতে তারা বসতঘরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন নদী ভাঙ্গন কবলে পড়া পরিবার। একই অবস্থায় রয়েছে ইসমানিরচর বাজার হতে উত্তরপাড়ার সোরাব মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত বসবাসরত পরিবারগুলো।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় দিয়েছিলেন নানান প্রতিশ্রুতি। তেমনিভাবে গত ২ মার্চ ২০২০ইং নদীভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছিলেন তৎকালীন গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান সাদী। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে ইসমানিরচর গ্রামের নদী ভাঙনের শিকার নদী তীরবর্তী মানুষের ভোগান্তির কথা শোনেন এবং এসব এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে এমনটাই আশ্বাস দিয়েছিলেন গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু কালের বিবর্তনে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
গত ২০২০ সালের ১২ই আগস্ট বুধবার পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেছিলেন, আগামী কয়েক বছর পর বাংলাদেশের কোথাও নদী ভাঙ্গন থাকবে না। সেসময় উপমন্ত্রী গজারিয়ায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী ভাঙ্গন প্রবণ দেড় কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে এমনটাই জানিয়েছিলেন।
মেঘনা নদী গজারিয়া অংশের সবচেয়ে ভাঙ্গন প্রবণ এলাকা ইসমানির চর, হোসেন্দী, নয়নাগর, গোয়ালগাঁও, চর বলাকী। প্রায় প্রতি বছরই এসব এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। ভাঙ্গনরোধে মেঘনা নদীর ইসমানির চর গ্রামের অংশে একটি বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হলেও দীর্ঘদিনে সেটি নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এসময় উপস্থিত ছিলেন গজারিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আতাউর রহমান নেকী, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম খাঁন, হোসেন্দী ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কিরণ সরদার, ইলিয়াস মোল্লা মেম্বার, মোবারক খাঁন, রুহুল আমিন, ডাঃ সোবহান, মোঃ হারুন অর রশিদ, সোহেল রানাসহ ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।