নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের পদ্মা সেতু উত্তর থানা এলাকার চন্দ্রেরবাড়িতে ইউনানী-আয়ুর্বেদ, ভেষজ, হারবাল ও কবিরাজি দাওয়াখানা চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপকৌশল। এলাকার নিরীহ সহজ-সরল অসহায় মানুষদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চন্দ্রেরবাড়ি বাজার অবস্থিত আলহামদুলিল্লাহ শেফালয় অর্গান এর মালিক আব্বাস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়গুলো দেখার যেন কেউ নেই। ভুয়া চিকিৎসক আব্বাস উদ্দিনের আলহামদুলিল্লাহ শেফালয় অর্গান নামে দাওয়া বন্ধে কোন সংস্থা উদ্যোগ নিচ্ছে না। এলাকার অলিগলির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রচারপত্রে এই চিকিৎসক যৌন দুর্বলতার চিকিৎসার নামে পুরুষ ও মহিলাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রথমেই হরেক রকমের বাহারি চকচকে বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে লোভে ফেলার অপচেষ্টা চালায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হেমিক ও পল্লী চিকিৎসক নামে পরিচিত আব্বাস উদ্দিন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার জঙ্গলকান্দি এলাকার রফিক মাদবরের ছেলে। সে গত ৩ বছর পূর্বে মাওয়া এলাকায় এসে শিমুলিয়া ঘাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে শরবত বিক্রি করতেন। এর কিছুদিন পরেই তিনি চন্দ্রেরবাড়ি বাজারে একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ শেফালয় অর্গান নাম দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান খুলেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কবিরাজি সকল প্রকার চিকিৎসা দেওয়া হয় যেমন- যৌন সমস্যা, প্যারালাইসিস, কিডনিতে পাথর, প্রস্রাবের রাস্তায় সমস্যা, হার্টের সমস্যা এছাড়াও সব ধরনের জটিল ও কঠিন রোগের সুচিকিৎসা পাবেন ইনশাল্লাহ নামে প্রচার শুরু করেন। আরো প্রচার করেন নামাজের সময় কেউ ফোন করবেন না। কিভাবে আসবেন, পদ্মা সেতুর টোল খান বাড়ি নামতে হবে। চেম্বার শিমুলিয়া মাওয়া ঘাট চন্দ্রেরবাড়ি বাজার বটতলা রোড লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ, বিক্রমপুর।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় কথিত এই হারবাল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো অপচিকিৎসার শিকার হয়ে শারীরিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই। এ ধরনের হারবাল চিকিৎসার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করছে ভুয়া চিকিৎসক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যৌন রোগী জানান, আমি যৌন রোগের জন্য তার দোকানের হারবাল ওষুধ খেয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। পরে ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করতে হয়েছে আমাকে।
অপর আরেকজন কিডনি রোগী বলেন, আমি কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণে তার ওষুধ খেয়েছিলাম। পরে আমার কিডনিতে আরো বেশি সমস্যা হয়। পরে আমি ঢাকায় গিয়ে ডাক্তার দেখানোর ফলে ডাক্তার বলেছেন, আরো পরে আসলে কিডনিতে বড় ধরণের সমস্যা দেখা দিত। দীর্ঘ ৫ মাস ওষুধ খেয়ে ভাল
হয়েছি।
এ ব্যাপারে আলহামদুলিল্লাহ শেফালয় অর্গান এর মালিক আব্বাস উদ্দিনের কাছে জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সালেহিন বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আসলে ঔষধ প্রশাসনের ব্যাপারে আমাদের কোন হাত নেই। এগুলো জেলা ড্রাগ কর্মকর্তারা দেখেন। আমি এই বিষয়টি উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে উপস্থাপন করবো।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, কোন রেজিষ্টার ডাক্তার ছাড়া এসব রোগের চিকিৎসা কেউ করতে পারেন না। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।