নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের পদ্মা সেতুর কোল ঘেঁষা মাওয়া রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ ও উচ্চশব্দে গান বাজনা বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সভা করায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী সালেহ আহমেদ রনি, টুটুল বেপারী, উত্তম বাবু ও কাওছার বলেন, রিসোর্টটিতে নানা ধরনের অশালীন কাজ হয়। মাদক বিক্রয়, ঘন্টা হিসেবে রুম ভাড়া, উচ্চশব্দের গানের তালে সুইমিং পুলে অশালীন ড্রেস পরে নাচানাচিসহ বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ হয়। গত শুক্রবার উচ্চশব্দে গান ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের প্রতিবাদ করায় রিসোর্ট ম্যানেজার নাছিম ও মালিক সাবেক ডিআইজির ভাই আলী আকবর হাওলাদার আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয় দেখিয়েছে এবং মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলেও হুমকি দিচ্ছে।
মাওয়া রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসিমুল হক হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক বিক্রয়ের বিষয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা সত্য নয়। তবে আমাদের রিসোর্টে পিকনিকের তিনটি স্পট থাকায় মাঝেমধ্যে উচ্চশব্দে গান বাজে তবে এটি আমরা আগামীতে সিডিউল মেইনটেইন করব।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ শুক্রবার বিকেল ৫টায় উপজেলার মাওয়া পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলায় এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, জাতীয় পার্টি নেতা, বিভিন্ন মসজিদের ইমামসহ এলাকার সুশীল সমাজের ৫ শতাধিক মানুষ।
সভায় বক্তারা বলেন, মাওয়া রিসোর্টের আশপাশে ৯টি মসজিদ, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি কিন্ডারগার্টেন, ১টি কবরস্থান, ২টি মাদরাসা ও ১টি বাজার আছে। কিন্তু রিসোর্টে সারাক্ষণ উচ্চশব্দে গান বাজানোর কারণে বাচ্চাদের পড়াশোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানুষ মারা গেলেও দাফন করার সময় গান বাজনা বন্ধ করা হয় না। কবর জিয়ারতের সময়ও একই অবস্থা। সুইমিং পুলে মেয়ে মানুষ নাচানাচি করে। মসজিদগুলোতে মুসুল্লিদের গানের আওয়াজে নামাজও পড়তে অসুবিধা হয়। আশেপাশের বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু ডিজে মিউজিকের সাউন্ডে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কিন্তু রিসোর্ট মালিক প্রশাসনের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় ভয়ে আশেপাশের লোকজন কিছু বলতে পারে না। রিসোর্টটিতে একেকটা রুম ঘন্টাব্যাপী ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। মেয়ে নিয়ে কারবার থেকে শুরু করে সব ধরনের মাদকদ্রব্যের আখড়াও বলা চলে। প্রায় ১০০/১৫০ লোক এইখানে কাজ করে, অথচ এলাকার কোনো লোককে এইখানে চাকরি দেওয়া হয় না। এর কারণ, তাদের সব গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। তাই দূর থেকে স্টাফ এনে নিয়োগ দেওয়া হয়। এলাকার লোক নিয়োগ দিলে এসব অপকর্ম করতে দিবে না। দূরের স্টাফদের দিয়ে মেয়ে, গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল সরবরাহ করা হয়। এলাকার লোক তো এসব করতে দিবে না। তাই এদের চাকরি দেওয়া হয় না। তাই এই নোংরামি, ডিজে গান বাজনা বন্ধের দাবি জানায় তারা।