নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে কালবৈশাখীর ঝড়ে দোতলা ভবনের দেয়াল ধ্বসে পড়েছে। এছাড়া গত দুই দফা ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন বসতবাড়ি ঘর ও দোকান পাটের টিনের চালা উড়ে গেছে। গত মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে দমকা হাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সকাল পর্যন্ত বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুতের লাইন সচল হতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন দেয়াল ধ্বসে পড়ে ও দোকান পাটের টিনের চালা উড়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙ্গে পড়ার পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে দীর্ঘ লোডশেডিং জনজীবন অতীষ্ঠ করে তুলেছে।
সূত্র মতে জানা যায়, এ উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৯ মেগাওয়াট। এর মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৪ মেগাওয়াট। গতকাল বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ১০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। লক্ষ্য করা যায়, উপজেলার হরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন (সাবেক মা মেডিকেল) খোকনের দোতলা ভবনের দেয়াল ধ্বসে রাস্তার উপরে পড়েছে। এতে মানুষের চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়। একই এলাকার সিরাজুল ইসলামের জায়গার প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ে। শ্রীনগর বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন বসতবাড়ি ও সড়কের পাশে গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছন্ন হয়ে যায়।
দেখা গেছে, বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলা সদর এলাকায় বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শ্রীনগর থানার সামনে প্রায় হাঁটু পানি জমতে দেখা গেছে। পানি নিষ্কাশনের কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ জলাবদ্ধতার শঙ্কা করা হচ্ছে। এই জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকালে হঠাৎ প্রবল ঝড়ে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মুহুর্তের মধ্যে ঘরের চালা উড়ে যায়। গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাচ্ছে। ঝড় অজুহাতে বিদ্যুতের সেবা আরো ব্যাহত হচ্ছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই ঝড়ে কোথাও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ঝড়ের পরেই শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মীরা এলাকা পর্যবেক্ষণে নামেন। ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. মাহফুজ রিবেন জানান, আমরা এলাকা পরিদর্শন করেছি।
পল্লী বিদ্যুৎ শ্রীনগর জোনাল অফিসের ডিজিএম মদন গোপাল সাহা জানান, গতকাল বুধবার রাতের ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে ৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ১০-১২টি মিটার নষ্ট হয়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে শতাধিক জায়গায় তার ছিঁড়ে গেছে। প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল। সকালের ঝড়ের তান্ডবে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমরা সদর এলাকায় লাইনটি দ্রুত দেয়ার চেষ্টা করছি। পর্যায়ক্রমে উপজেলাব্যাপী লাইন সচল করা হবে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানান, শ্রীনগরে এখন ৪৪ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। দেশের দুটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে।