নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগরে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামীর হামলায় বাদি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত সাইফুল ইসলামকে (৩২) উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মামলার (শ্রীনগর থানা মামলা নং-১৭, তাং, ২০/১২/২০) আসামী ইকবাল হোসেন (৪০) তার সহযোগীরা সাইফুল ইসলামকে মামলা তুলে নিতে এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ নভেম্বর সকালে উপজেলার আটপাড়া ইউনিয়নের হাঁসারগাঁও গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইকবাল হোসেন, তার ভাই নূর হোসেন (৫০), ভাতিজা মো. হৃদয় (২২) ও ছেলে মো. অয়নের (২০) বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী হয়েছে। জিডি নং-২৩৩। অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন হাঁসারগাঁও গ্রামের মৃত তসের আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, ২০২০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করে। এলাকায় লম্পট হিসেবে পরিচিত ইকবাল হোসেন প্রায় ৮ মাস কারাভোগ করে জামিনে এসে মামলার বাদিকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি ও হুমকি ধমকি প্রাদন করে। গত শনিবার সকালে হাঁসারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ইকবাল হোসেন গং মামলা তুলে নিতে চাপ দিলে সাইফুল ইসলাম মামলা উঠাতে রাজি না হলে তাকে মারধর করা হয়। ইকবালের বিভিন্ন অপরাধজনিত কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
ওই এলাকার একলাছ শেখ (৬৫), আব্দুল আলীম (৬০), মো. ইছহাক (৫৮), নুরু মিয়া আসামী ইকবালের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, লম্পট ইকবাল ও তার বেপরোয়া বড় ভাই নূর হোসেনকে থামানো দরকার।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় লম্পট হিসেবে পরিচিত ইকবালের বিরুদ্ধে চুরি, শিশু নির্যাতন ও মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে কয়েকমাস আগে এলাকাবাসী অভিযুক্ত ইকবালের বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করে। এর আগে ইকবাল হোসেন নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় জেল খেটে জামিনে আসে। শিশু নির্যাতনের চলমান মামলার প্রধান আসামী ইকবাল হোসেন গেলো ইউপি নির্বাচনে আটপাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ২ ভোট। ইকবাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আসামী ইকবাল হোসেন আমাকে নানাভাবে মামলা উঠাতে চাপ সৃষ্টি করে আসছিল। গত শনিবার আমাকে ইকবাল হোসেন ও তার ভাই ভাতিজারা রাস্তায় আমার ওপর হামলা চালায়। বিষয়টি এলাকার সবাই জানেন। বাধ্য হয়ে এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় একটি জিডি করেছি। গত ১৭ মার্চ ২০২২ তারিখে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি প্রদানের ঘটনায় ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি দায়ের করি। ডিজি নং-৬৮৬। এ অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য পারভীন বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তিনি কারও কথা শুনেন না।
আটপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সে আসেনি। ইকবাল ও তার ভাই নূর হোসেন এলাকায় মানুষকে প্রশাসনের ভয় দেখায় বলে আমি লোকমুখে শুনেছি।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার ডিউটি অফিসার এস আই প্রভাষ কুমার বলেন, অভিযুক্ত ইকবাল ও তার ভাই নূর হোসেনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়রী হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।