নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে দিয়াশলাই চাওয়াকে কেন্দ্র করে হানিফ তালুকদার (১৫) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ আগস্ট শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মালখানগর ইউনিয়নের আরমহল গ্রামের জাকের জামে মসজিদের বিপরীত পাশের রাস্তায় ওই কিশোরের উপর অতর্কিত হামলা চালায় পূর্ব শিয়ালদী গ্রামের বুলু খা’র ছেলে সীমান্ত ওরফে শামীম (২০), আতাহারের ছেলে মেহেদী (১৫), মোবারকের ছেলে সোহান (১৬) ও নাজু মীরের ছেলে সাজ্জাদ মীর (৩২)সহ ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হানিফকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। দুই দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের আরমহল গ্রামের হযরত আলী তালুকদারের ছেলে। এ ঘটনায় সিরাজদিখান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর পূর্ব শিয়ালদী গ্রামের আজাহার মীরের ছেলে অনিকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ঘাতক খুনিরা পলাতক রয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে ঢাকা থেকে হানিফের মৃতদেহ গ্রামে আনার পর দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবার পূর্ব শিয়ালদী ব্রীজ সংলগ্ন মোড়ে হানিফের বড় ভাই মিজানের কাছে সিগারেট জ্বালানোর জন্য দিয়াশলাই চায় সীমান্ত ওরফে শামীম। মিজান তাকে দিয়াশলাই না দিয়ে বলে তুই আমার বয়সে অনেক ছোট তুই আমার কাছে দিয়াশলাই চাস কি করে। পরে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি মিজান স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য খালেক মৃধাকে জানানো হলে সীমান্ত ওরফে শামীম ইউপি সদস্যের নাতী হওয়ার সুবাদে ঘটনার কোন ভ্রুক্ষেপ না করে এড়িয়ে যান তিনি। হাতাহাতির জের ধরে ইউপি সদস্যের হুকুমে গত ১৪ আগস্ট রাত ৮টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সীমান্ত ওরফে শামীম তার সঙ্গীদের সাথে নিয়ে হানিফের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এলাকাবাসী জানায়, গত শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে আরমহল জাকের জামে মসজিদের বিপরীত পাশের রাস্তার পাড়ে হানিফকে তার বাবা ও ভাইদের সামনে গাছের ডাল ও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে সীমান্ত ওরফে শামীম (২০), মেহেদী (১৫), সোহান (১৬) ও সাজ্জাদ মীর (৩২)সহ ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। এ সময় হানিফের বাবা ও ভাইয়েরা তাকে বাঁচাতে গেলে আহত হয়। পরে গুরুতর আহত হানিফের স্বজনরা তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। যারা হানিফকে পিটিয়েছে তারা এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তারা মাদকের নেশাসহ নানা অপকর্মে জড়িত। হানিফের বড় ভাই মিজান জানায়, পূর্ব শিয়ালদি গ্রামের সীমান্ত ওরফে শামীম (২০), মেহেদী (১৫), সোহান (১৬) ও সাজ্জাদ মীর (৩২) ও তাদের সাথে থাকা ১৫-২০ জন আমাদের সামনে আমার ছোট ভাইকে গাছের ডালা ও বাঁশ দিয়ে পিটি মাথার খুলি ফাটিয়ে দেয়। এরপর আমার ভাইকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে ২ দিন আইসিইউতে ভর্তি থাকা অবস্থায় মারা যায়। সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে আরমহল গ্রামে একটা সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত হানিফকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। আজকে (রবিবার) সকালে খবর পাই ভোর রাতে সে মারা গেছে। এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেলে সুরত হাল ময়না তদন্ত রিপোর্ট তৈরী করবে শাহবাগ থানা পুলিশ। ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বাদী পক্ষের অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।