নিজস্ব প্রতিবেদক
সিরাজদিখানে ইছামতী নদী দখল করে পুকুর তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের সিরাজদিখান থেকে বয়রাগাদী ইউনিয়নের ভূইরা কুমার বাড়ি পর্যন্ত নদীটি দখল করে পুকুর তৈরির অভিযোগ উঠেছে লতব্দী ইউনিয়নের রামানন্দ গ্রামের ওমর আলীর পুত্র মোবারক ও গিয়াসউদ্দিনের বিরুদ্ধে। নদী দখলের ফলে নদীর পনি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গ্রামের কৃষকদের হাজার হাজার বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। অপরদিকে বর্ষা মৌসুমে মাঠের পানি এ নদী দিয়ে নিষ্কাশন হতো। সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধার পাশাপাশি গ্রামের মানুষ এই নদী থেকে উৎপাদিত নানা প্রজাতির দেশি মাছ ধরে তাদের পুষ্টির চাহিদা মেটাতো। কিন্তু দখলদারদের কারণে মানুষ সেসব সুবিধা থেকে এখন বঞ্চিত হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাহের ঘাটা হতে ভূইরা কুমারবাড়ি পর্যন্ত শাখা নদীটি দীর্ঘদিনের পুরনো নৌপথ। এই শাখা নদী দিয়ে বড় বড় পণ্যবাহী ট্রলার, নৌকাসহ নৌ-যান চলাচল করত। কৃষি মৌসুমে এই শাখা নদী দিয়ে কৃষিপণ্য ট্রলার বা নৌকাযোগে বহন করা হয়। ইরি মৌসুমে জমিতে সেচ কাজে এই নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। বিগত কয়েক বছর যাবৎ শুষ্ক মৌসুমে ভাটার সময় নদীটির পানি কমে যাওয়া ও চর পড়ায় ভূমিদস্যুরা চরের সরকারী খাস জমির মাটি কেটে খালের মুখ বন্ধ করে তা পুকুর বানিয়েছে। এতে পানি চলাচলে স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষকরা ও স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আব্দুল হালিম, মোয়াজ্জেম হোসেন খান, আমির হোসেন, ইয়াদুল জানায়, এই নদীটি দিয়ে আমরা চলাফেরা করতাম। নদীটি দিয়ে দক্ষিণ বাহের ঘাটা, উত্তর বাহের ঘাটা, করে ভূইরা, পাল পাড়া, ছোট পাউল দিয়া, কুমার বাড়িসহ ১০টিরও বেশি এলাকার লোকজন যাতায়াত করত। তবে গত বছর এই নদীটির ৩ সাইড বেঁধে দখল করে মোবারক পুকুর বানিয়ে মাছ ধরায় আমাদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। এ বছর আবার নতুন করে সামনে বাঁধ দিয়ে পুরো নদীটাই বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা বাঁধা দিতে গেলে তারা টেঁটা, বল্লম ও দা-কোদাল নিয়ে আমাদের মারতে আসে। এই নদীর পানি দিয়ে আমরা সেচ দিতাম। এখন এই বাঁধের ফলে আমাদের পণ্য আনা নেওয়াসহ সবকিছু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে দাবী জানাই, আমাদের এই নদীটি দখলমুক্ত করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে বয়রাগাদী ইউপি সদস্য মো. স্বপন বলেন, আমি এলাকাবাসীর কাছে খাল দখলের কথা শুনে সেখানে গিয়ে দেখি, আমাদের পুরনো ইছামতি নদীটি চর পড়ে ছোট হয়ে যাওয়ায় একটি প্রভাবশালী মহল বাঁধ দিয়ে পুকুর বানানোর চেষ্টা করছে। আমি এ বিষয়ে আমার পরিষদে ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসারকে জনিয়েছি। এ বিষয়ে মো. মোবারক সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম জালাল উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।