নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে লক্ষ টাকার সোনার ব্রেসলেট পেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে ১২ বছরের শিশু সামিম। উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের উপজেলা মোড় সংলগ্ন শেখ আলাউদ্দিন কমপ্লেক্সের নিচে শাহী রেস্তোরাঁয় গত ২৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দিনমজুর বাবার অভাবের সংসারে ৪ ভাই-বোনের মধ্যে বড় শামিম। মা-বাবা, ভাই-বোন নিয়ে সিরাজদিখান বাজার সংলগ্ন কাঠপট্টি মিলনের বাড়িতে ভাড়া থাকে। লেখাপড়া ছেড়ে বাবাকে সাহায্য করতে ১ মাস যাবৎ ২ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ নেয় উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের উপজেলা মোড় সংলগ্ন শেখ আলাউদ্দিন কমপ্লেক্সের নিচে শাহী রেস্তোরাঁয়।
প্রতিদিনের মত শিশু সামিম কাজ করতে গিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে টেবিলের নিচে দেখে সোনার তৈরী ১ ভরি ওজনের একটি হাতের ব্রেসলেট পড়ে আছে। ব্রেসলেটটি পেয়ে সাথে সাথে শাহী রেস্তোরাঁর মালিক মোঃ ইউসুফ হাওলাদারের কাছে জমা দেয় সে। মোঃ ইউসুফ হাওলাদার ব্রেসলেটের প্রকৃত মালিককে পেয়ে যথার্থ প্রমাণ নিয়ে ব্রেসলেটটি গত ২৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বুঝিয়ে দেন।
শিশু সামিম জানায়, আমি সব সময়ের মত টেবিল মুছতে গিয়ে নিচের দিকে দেখি, একটি চেইন পড়ে আছে। আমি চেইনটা হাতে নিয়ে সাথে সাথে মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেই। মালিক চেইনের মালিকের নিকট চেইনটি বুঝিয়ে দেন। আমাদের অভাবের সংসার তাই কাজ করে আমার বাবাকে সাহায্য করি।
শাহী রেস্তোরাঁর মালিক মোঃ ইউসুফ হাওলাদার জানান, আমি জানতে পারি আমার এক কর্মচারী সোনার তৈরী ১ ভরি ওজনের একটি হাতের ব্রেসলেট পেয়েছে। যাহার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ টাকা। আমি সাথে সাথে সংরক্ষণ করি এবং প্রকৃত মালিককে পেয়ে তার নিকট বুঝিয়ে দেই। পাশাপাশি এ ১২ বছরের ছেলের সততা দেখে আমি মুগ্ধ। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি। আমি এ ছোট ছেলের সততা দেখে তাকে ৫শত টাকা পুরস্কার দেই।
উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের কংশপুরা গ্রামের মোসাম্মদ লিপি বেগম জানান, শাহী রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে সোনার তৈরী ১ ভরি ওজনের একটি হাতের ব্রেসলেট হারিয়ে ফেলি। বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শাহী রেস্তোরাঁয় এসে খোঁজ করলে রেস্তোরাঁর মালিক জানান, আমরা পেয়েছি। আমি এ ব্রেসলেটের সঠিক প্রমাণ দিয়ে বুঝে নেই। ১২ বছরের এ ছেলের সততা দেখে আমি মুগ্ধ। আমি এ ছেলেকে ১ হাজার টাকা পুরস্কার দেই পাশাপাশি তার মঙ্গল কামনা করছি।