নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতা সুদর্শন গাঙ্গুলীর বাড়িতে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকার সংখ্যালঘু পরিবার পল্লীতে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলে নেয়ার জন্য স্থানীয় দুষ্কৃতিকারীরা আতঙ্ক সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের জন্যই এ কাজ করেছে। অভিযোগে জানা গেছে, গত সোমবার মধ্যরাতে উপজেলা কোলা ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতা সুদর্শন গাঙ্গুলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িঘরগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বাড়ির শিশু-নারী-পুরুষের কান্নায় কোলা গৌরীপুর গ্রামের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এতে মালামাল পুড়ে প্রায় কয়েক হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্য মিঠু গাঙ্গুলীর স্ত্রী পাঁপড়ি গাঙ্গুলী দাবি কলেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাড়ির মালিক সুদর্শন গাঙ্গুলী জানান, তিনি ঘটনার সময় বাড়ির অন্য বিল্ডিংয়ে ঘুমিয়েছিলেন। রাতেই খবর পাই, বাড়িতে একটি ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমার পুত্রবধু পাঁপড়ি গাঙ্গুলী ও বাড়িতে থাকা লোকজন ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু মুহূর্তেই আগুনে ঘরের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে আগুন লাগার কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাননি। সুদর্শন গাঙ্গুলী বলেন, ‘গত রোববার আমার ৮১ শতাংশ জায়গা প্রতারণা করে গাঙ্গুলী বাড়ির সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখল নেওয়ার অপচেষ্টা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করার জন্যই আমাদের আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য আগুন দিয়েছে অজ্ঞাতরা। ওই ঘরে বিদ্যুতের কোনো লাইন নেই, বাড়িতে আগুন লাগতে পারে এ রকম কোনো অব্যবস্থার কিছু নেই। রহস্যজনক এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, ‘গত রোববার উপজেলা আওয়ামীলীগ, সিরাজদিখান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মুন্সীগঞ্জ জেলা ও সিরাজদিখান উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে জেলা উপজেলার সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ কারণেই আমার বাড়িতে আগুন দিয়েছেন দুর্বৃত্তরা। আমি এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে তিনি থানায় মামলার জন্য লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান। এ বিষয়ে সিরাজদিখান খানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমি কোলা ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতা সুদর্শন গাঙ্গুলীর বাড়ির আগুন লাগার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষ আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সুদর্শন গাঙ্গুলী লিখিত অভিযোগ করেছেন বিষয়টি নিয়ে। এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছে, এলাকার এক সময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও রাজাকার পুত্র রগকাটা সিদ্দিক ওরফে সিদ্দিক মোল্লা বাহিনীর সদস্যরা গাঙ্গুলী বাড়ির জমি দখলে নেয়ার জন্য নানা তৎপরতা চালিয়ে আসছে। অসহায় গাঙ্গুলী পরিবারের পাশে যারাই সহায়তার জন্য যাচ্ছে তাদেরই মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। এই কুচক্রীরাই এই নাশকতার আগুন জ্বালিয়েছে শোকের মাস আগস্টে।