নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদেনীমন্ডল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর কাজির পাগলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত মোহাম্মদ ডাক্তারের ছেলে সাবেক বিএনপির নেতা ডি এম কামাল খালের মুখ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী নানান অভিযোগ। সে বিএনপির রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকার কিছু লোককে সাথে নিয়ে খালের মুখ বন্ধ করে বালি মাটি দিয়ে ভরাট করে বাড়ির প্রবেশ রাস্তা বানাচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকদের নানা অভিযোগ। এই খাল বন্ধ হওয়ায় হাজারো কৃষকের ফসলি জমির ক্ষতির আশঙ্কা। কৃষকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেকোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে।
এলাকাবাসী আব্দুল রাজ্জাক, আসরাফ আলি, আব্দুল বারেক, নজির ও ননি বেপারীসহ একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে জানান, রাস্তা ও স্থাপনা নির্মাণের নামে খাল ভরাট কাজ চলছে। খালের অনেক স্থানে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের গ্রামের উত্তর কাজি পাগলা খাল এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খালের মুখ বন্ধ করে দিয়ে এই গ্রামের ডি এম কামাল রাস্তা তৈরি করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও গ্রামবাসীরা। খালটি উন্মুক্ত করে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ তৈরি করতে লৌহজং উপজেলা প্রশাসন ও মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
লৌহজং উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তুহিন মাঝি অভিযোগ করেন বলেন, আমি খালটির মুখ বন্ধ করে রাস্তা তৈরি করতে তাকে নিষেধ করেছি। তিনি আমার কথায় কর্ণপাত করেননি। পরে আমি মেদেনীমন্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, হাজার হাজার মানুষের বাড়ির বৃষ্টির পানি এবং কৃষকের ফসলি জমির পানি প্রবাহের এই খাল বন্ধ হলে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানে যে কোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে। এসময় তিনি ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ, কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ’ কথাটি স্মরণ করেন। তিনি আরো জানান, এখানে বিভিন্ন কর্মকর্তা অনেকেই এসে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে গেছেন। তারা চলে গেলে আবার কাজ শুরু করে। এতে এলাকাবাসীর ভিতরে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মেদেনীমন্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফ হোসেন খান বলেন, আমি সচিবকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম। সে খালের মুখ বন্ধ করে রাস্তা তৈরি করতে নিষেধ করে এসেছে। এসময় তিনি বলেন, খালটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খালটি রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কৃষকদের ফসলি জমির পানি প্রবাহে খালটি অনেক উপকার আসে।
ডি এম কামালকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খালের মুখ বন্ধ করে রাস্তা বানানোর কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, খাল কি না তা আমি জানি না। তবে বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বানানোর কথা স্বীকার করেন। রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে লোকজন নিয়ে শক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছেন, আপনি স্থানীয় লোকজনের কথা শুনতে চাইছেন না -এমন প্রশ্নে তিনি রেগে যান। যে যা পারে করুক, আমি দেখবো বলে কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি খালের মুখ বন্ধ করে রাস্তা বানানোর বিষয়টি গত কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি। আমি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদের ভূমি অফিস থেকে লোকজন গিয়ে খালের মুখ বন্ধ করে রাস্তা বানাতে নিষেধ করে এসেছে। এরপরও যদি তারা কাজ চালিয়ে যায় তাহলে আমি কঠোরভাবে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিব।