নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আলমপুর বাজার সংলগ্ন খালে একাধিক ড্রেজার স্থাপন করে চলছে রমরমা ভরাট বাণিজ্য। আর ড্রেজারের দীর্ঘ পাইপ লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় বিভিন্ন পাকা সড়ক, বসতবাড়ির রাস্তা ও ফসলি জমির ওপর দিয়ে। যত্রতত্র এসব ড্রেজারের পাইপে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে ড্রেজার স্থাপন, কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট করছে একটি সিন্ডিকেট মহল। বাড়ৈখালী এলাকার এরশাদ ও সুমনের নেতৃত্বে ২টি ড্রেজার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া হাঁসাড়া এলাকার সাবেক একজন প্রতিনিধির হয়ে পলাশ নামে এক ব্যক্তি ১টি ড্রেজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। আর খালে এসব ড্রেজারের সাব-স্টেশনসহ মেশিন ভাড়ায় চালিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিন্নাত আলী নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ড্রেজার ভাড়া আনা হয়েছে। এর আগে গত ডিসেম্বরের ২১ ও ২২ তারিখে এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে কিছুদিন ড্রেজার বন্ধ থাকলেও ক’দিন বাদেই ড্রেজার ফের চালু করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। সরেজমিনে গিয়েও এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
দেখা গেছে, আলমপুর বাজার সংলগ্ন খালে সেতুর উত্তর দিকে ২টি ও দক্ষিণ দিকে ১টি ড্রেজার বহাল তবিয়তে রয়েছে। শ্রমিকরা ড্রেজারের মাধ্যমে বাল্কহেড থেকে বালু আনলোড করছেন।
এলাকাবাসী জানান, শ্রীনগর-আলমপুর খালটির সাথে বিস্তীর্ণ আড়িয়ল বিল ও মদনখালী খালে সংযোগ থাকায় এদিকে প্রতিনিয়ত কৃষি পণ্যবাহী অসংখ্য নৌকা ও ট্রলার চলাচল করে। অথচ শুষ্ক মৌসুমে খালে পানি কম থাকায় খালটির প্রস্থ কমে গেছে। এর মধ্যে খালের বিভিন্ন পয়েন্টে বালুবাহী বাল্কহেডের অবাধ চলাচলের ফলে স্থানীয় কৃষকদের কৃষি পণ্যবাহী নৌযানগুলো চলাফেরায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলমপুর গ্রামের স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, হাঁসাড়া-বাড়ৈখালী সড়কের ওপর দিয়ে ড্রেজারের মোটা পাইপের লাইন টানা হয়েছে। এতে একদিকে প্রধান সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে যেমন ঝুঁকি বাড়ছে, অপরদিকে সড়কের পাশে বসতবাড়িতে প্রবেশের রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে লোহার মোটা পাইপ ডিঙ্গিয়ে মানুষকে চলাফেরা করতে হচ্ছে। প্রভাবশালী ড্রেজার ব্যবসায়ীরা কারও কথা শুনছেন না। বাধ্য হয়েই দূর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট ড্রেজার ব্যবসায়ীদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ড্রেজার সংক্রান্ত বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
শ্রীনগর উপজেলা সহকারী (ভূমি) সাফফাত আরা সাঈদ জানান, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।