নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার চারিগাঁও গ্রামে সুদের টাকা পাওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে এক দম্পতির বসতঘরসহ ঘরে থাকা সমস্ত জিনিসপত্র লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার ওই দম্পত্তি দিপা বেগম বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ আদালতে এজাহার দায়ের করেছেন। মুন্সীগঞ্জ আমলী আদালত-৬ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিতে তদন্তে দিয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, লৌহজং উপজেলার চারিগাঁও গ্রামের আওলাদ হোসেন বিগত প্রায় ৭ মাস আগে একই গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মানিক হাওলাদারের কাছ হতে ৮০ হাজার টাকা সুদ নিয়েছিলেন। সুদে টাকা নেওয়ার সময় সুদের ৮ হাজার টাকা প্রতিমাসে পরিশোধ এবং মূল টাকা নেওয়ার ৩ মাস আগে আওলাদ হোসেনকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে অবহিত করার কথা ছিল। সেই মোতাবেক আওলাদ হোসেন নিয়মিত সুদের টাকা পরিশোধ করে আসছিল। কিন্তু বিগত প্রায় ২ মাস আগে মানিক হাওলাদার ১ মাসের মধ্যে সুদসহ সব টাকা একসাথে আওলাদের কাছে ফেরত চায়। সেসময় কথা অনুযায়ী ৩ মাসের মধ্যে আওলাদ টাকা পরিশোধের কথা বললে মানিক তাকে ১ মাসের মধ্যে সমস্ত টাকা পরিশোধ করতে হবে না হলে তার বাড়িঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে গত ১২ জানুয়ারী মানিক তার দলীয় লোকজন নিয়ে আওলাদ হোসেনের বসতঘরসহ ঘরে থাকা ফ্রিজ, টিভি, সোকেস, আলমারী, আলনা, ২টি খাট, ২টি চৌকি, ৪টি ফ্যান, গ্যাস সিলিন্ডার, চেয়ার টেবিল, বিছনার চাদর, তোষক, বালিশ, হাড়িপাতিল, মূল্যবান কাপড় চোপড় সব লুটপাট করে নিয়ে যায়। সেসময় আওলাদ হোসেন ও তার স্ত্রী দিপা বেগম বাঁধা দিলে তাদের মারধর করা হয়। পরে দীর্ঘদিন এলাকায় ঘুরে প্রভাবশালী মানিকের বিরুদ্ধে বিচার না পেয়ে আদালতে এসে দিপা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এসময় তার স্বামী আওলাদও আদালতে হাজির ছিলেন।
এ ব্যাপারে আওলাদ হোসেন বলেন, মানিক হাওলাদার লোকজন নিয়ে আমার টিন ও কাঠের ঘর, ঘরে থাকা সমস্ত আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এমনকি আমার পাকা গোসলখানা ভাংচুর করে ইট খুলে নিয়ে গেছে। আমার টিউবওয়েল খুলে টিউবওয়েলের পাইপসহ নিয়ে গেছে। সে আমার কাছে মাত্র ৮০ হাজার টাকা পায় অথচ সে আমার ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
আওলাদ হোসেনের স্ত্রী দিপা বেগম বলেন, আমাদের ঘরতো নিয়েছেই। ঘরে যা ছিল সব নিয়েছে এমনকি আমার ছেলেমেয়ের পড়ার টেবিল, বই, খাতা পর্যন্ত মানিক হাওলাদার তার লোকজন নিয়ে আমার ঘর হতে নিয়ে গেছে। এলাকায় বিচার না পেয়ে আদালতে এসে মানিক হাওলাদার ও সালাম সেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে সুদের পাওনা টাকার বিষয়টি স্বীকার করে মানিক হাওলাদার বলেন, আমি আওলাদের কাছে ৮৫ হাজার টাকা পাই। টাকা না দেওয়ায় আমি নিজে ঘর ভাঙ্গিনি ওর চাচা ঘর ভেঙে আমাকে দিয়ে দিয়েছে।
বিষয়টি ওই আদালতের পেশকার রুবেল নিশ্চিত করেছেন।