নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের আনারপুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাথাভাঙ্গা সড়কের আনারপুরা সরকার বাড়ির সামনে প্রায় ২০০ মিটার সড়কে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, ওই রাস্তায় ড্রেন না থাকায় ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় উঠে আসছে। রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকে। আনারপুরা ১নং ওয়ার্ডের সরকার বাড়ি থেকে শিকদার বাড়ি পর্যন্ত ২০০শ মিটার রাস্তাটির সংস্কার কাজ না হওয়ায় এলাকার শত শত জনগণ সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জনগণ সম্পূর্ণ রাস্তাটি ড্রেনের মাধ্যমে সংস্কার করে উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন। ভারী ওজনের বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে পাকা রাস্তা কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে উত্তর শাহপুর, মিরেরগাঁও, টেঙ্গারচর, বৈদ্যারগাঁও, মাথাভাঙ্গা, মিরপুর, উত্তর ফুলদী, রসুলপুরসহ ১০ গ্রামের মানুষের চলাচল করতে হয় অসহনীয় ভোগান্তি নিয়ে। সড়কের বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে বড় বড় গর্ত। এগুলোতে পানি জমে রয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। আশপাশের কয়েকটি কলকারখানার হাজার হাজার শ্রমিকের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। তাদের বেশিরভাগ সময় পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। তাতে করে সঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের আনারপুরা মধ্যপাড়া অংশের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে বড় গর্তের। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশের পাকা সড়ক কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকার কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী ভারী ড্রাম ট্রাকে করে মাটি আনা নেয়ার কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা ভেঙে গেছে।
আক্তার জামান সরকার নামে গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। বর্তমানে কী একটা অবস্থা, গাড়ি তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল করা মুশকিল।
আনারপুরা গ্রামের বাসিন্দা কামাল মিয়া বলেন, এই সড়কে এখন আর গাড়ি চলাচল করতে পারে না। সড়ক ভেঙে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি হয়ে যায়। রাস্তায় এখন সবসময় জলাবদ্ধতা থাকে।
সিএনজি চালক মহসিন বলেন, অতিরিক্ত ওজনের ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তা ভেঙে গেছে। এখন আমরা এই সড়কে কোনো ধরনের গাড়ি চালাতে পারছি না। আর চালাতে গেলে সবসময় ঝুঁকি থাকে। প্রতিনিয়ত উল্টে যায় সিএনজি অটোরিকশা।
এছাড়াও রাস্তাটি দিয়ে গজারিয়া উপজেলা, গজারিয়া সরকারি কলেজ, ভাটেরচর বাজার, ভাটেরচর দে এ মান্নান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও আনারপুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও হাজী কেরামত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়, ভাটেরচর মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে জলাবদ্ধ বৃষ্টির পানি থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা।
কলেজ শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, আমাদের প্রায় প্রতিনিয়ত এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তাটির বেহাল দশা গত কয়েক মাস ধরে। অতি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা না হলে এখানে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বৃহত্তর জনস্বার্থে দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা প্রয়োজন।
ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাহিদ মোঃ লিটন বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামত করা হবে। খুব দ্রুত বড় বড় গর্তের মধ্যে ইট বালু ফেলে ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে এলজিইডির গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ইশতিয়াক আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েক হাজার মানুষ এ রাস্তাটি ব্যবহার করেন। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এ অর্থবছরে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
গজারিয়ার আনারপুরা সড়কে জলাবদ্ধতায় গ্রামবাসীর ভোগান্তি
আগের পোস্ট